হিন্দুদের গাজনের আয়োজন করেন মুসলিমরা : অনন‍্য নজির সম্প্রীতির শেখ ভাইদের গাজনে

14th April 2021 4:48 pm বাঁকুড়া
হিন্দুদের গাজনের আয়োজন করেন মুসলিমরা : অনন‍্য নজির সম্প্রীতির শেখ ভাইদের গাজনে


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :  দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে বাঁকুড়ার ইন্দাসের করিশুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ছোট্ট গ্রাম গোবিন্দপুর। আর এই গ্রাম গোবিন্দপুরই বছরের পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির তৈরী করে চলেছে। প্রায়শই জাতিগত বিদ্বেষ আর হিংসার খবরের মাঝেও এযেন এক মরুদ্যান।

   দেবাদিদেব মহাদেব হিন্দুদের আরাধ্যদেবতা হিসেবেই পরিচিত। চৈত্র সংক্রান্তিতে রাজ্য জুড়েই অসংখ্য ছোটো বড় শিবের গাজন ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর ঠিক সেই ভাবেই ইন্দাসের এই গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শেখ ভাইদের হাত ধরে মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে বছরের পর চলে আসছে শিবের গাজন মেলা। মূল উদ্যোক্তা তাঁরাই, এমনকি খরচের সিংহভাগ বহন করেন ঐ সংখ্যালঘু পরিবারটির সদস্যেরা।

     এই শিবের মন্দির প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে এক গল্প। সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে শেখ পরিবারের বর্তমান সদস্য জিয়া আলম বলেন, তাঁদের পূর্বপুরুষ শেখ ইয়াকুব, শেখ ইউসুফ ও শেখ এহিয়া তান ভাই মিলে পাত্রসায়রের রাণীর জঙ্গলে পাতা কুড়োতে গিয়েছিলেন। সেখানে এক অদ্ভূত দর্শণ পাথরের সন্ধান তাঁরা পান। তখন ঐ পাথরটিকে তাঁরা গোরুর গাড়িতে চাপিয়ে নেন। কিন্তু গ্রামে ঢোকার ঠিক আগে মুহূর্তে আর গাড়িটিকে নিয়ে যাওয়া যায়নি। সেই রাতে তাঁরা তিন ভাইকে স্বপ্নে দেবাদিদেব মহাদেব ঠিক ঐ জায়গাতেই তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন। পরদিন সকালে উঠেই গ্রামে মন্দির প্রতিষ্ঠা ও গাজন উৎসবের সূচণা হয়।

  বর্তমানে এই মেলা ও গাজন 'শেখ ভাইদের গাজন' নামেই পরিচিতি লাভ করেছে। দূর দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্ত এখানে ছুটে আসেন। তিন দিনের এই মেলায় ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলে একসাথে আনন্দ চেটে পুটে ভাগ করেন।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।